পলাশ বড়ুয়া ও ইমরান খান::
কক্সবাজারের উখিয়ায় পাহাড় কাটার সময় মাটিচাপা পড়ে তিন রোহিঙ্গা নিহতের ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি বন মামলা।
মর্মান্তিক এ ঘটনায় পাহাড়খেকো ও ডাম্পার মালিক দাবীদার ৯ জনকে আসামি করে বন মামলা রুজুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উখিয়া রেঞ্জ অফিস। যার মামলা নং-২৫,২৬/ উসবি-অব ২০২২/২০২৩। তবে এ রিপোর্ট লেখাকালীন অপর মামলাটি প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন উখিয়া থানা পুলিশ।
বন মামলার আসামিরা হলো, রাজাপালং ৬নং ওয়ার্ডের মহুরী পাড়া এলাকার বাসিন্দা মৃত বশু উল্লাহ’র ছেলে আব্দুল মান্নান প্রকাশ টনা মিস্ত্রি, একই এলাকার মৃত ভুট্টা আলির ছেলে নেছার আহমদ, মাসকারিয়া এলাকার মৃত আবুল কাশেমের ছেলে নুরুল ইসলাম প্রকাশ নুরু মাঝি, শীলের ছড়া এলাকার মৃত আবুল বলীর ছেলে আব্দুল জব্বার প্রকাশ ভুলো, ও তার ভাই নুর মোহাম্মদ বলি, মধুরছড়া এলাকার মীর আহমেদ এর ছেলে মোহাম্মদ আলম।
স্থানীয়রা বলছে, উখিয়ার বন বিভাগকে ম্যানেজ করে প্রতিদিন এ পাহাড় কাটা হচ্ছে। এখানে রাত হলে অনেক রোহিঙ্গা শ্রমিকের আগমন ঘটে। এজন্য পাহাড় কাটা বন্ধ হচ্ছে না। এসব কাজে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ মদদ দিয়ে যাচ্ছে ভিলেজার ও হেডম্যান। ইতিপূর্বে এই জায়গায় হতাহতের ঘটনা ঘটে ছিল। সেটি ধামাচাপা দেওয়া হয়। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া সময়ের দাবী।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উখিয়া সদর বনবিট কর্মকর্তা মো: সাজ্জাদুজ্জামান বলেন, গতকাল সারা রাত আমরা টহলে ছিলাম এবং হলদিয়াপালং ইউনিয়ন থেকে একটি ডাম্পার গাড়ি জব্দ করি। তারপরও গোপনে একটি চক্র রাতের আধারে বনবিভাগের চোখ ফাঁকি দিয়ে পাহাড় কাটে। এটা আসলে দুঃখজনক। তবে, বনরক্ষার্থে রাতদিন প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বন কর্মকর্তারা।
পাহাড় কাটার বিষয়ে বনবিভাগের কর্মকর্তাদের
যোগসাজস ও অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে, উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী শফিউল আলম বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, কোন দুর্ঘটনা ঘটলে এটা কে পিএফ পাহাড় বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু এর আগে বাপ-দাদার আমল থেকে দখলে রেখে নিজেদের মালিক দাবী করে জবরদখলকারীরা।
তিনি আরও বলেন, ইতিপূর্বেও অভিযুক্ত পাহাড় খেকোদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। গোপনে চক্রটি পাহাড় কাটতে গিয়ে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় ৩ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে পৃথক দুইটি মামলা রুজু হয়েছে।
অপরদিকে রিপোর্ট লেখাকালীন উখিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, মাটি চাপায় নিহত ভিকটিম এর পরিবারের পক্ষ থেকে এজাহার দিয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন।
উল্লেখ্য, ২৯ মার্চ ভোর রাতে উখিয়া রাজাপালং মহুরী পাড়া এলাকায় পাহাড়ের মাটি চাপাই ৩জন রোহিঙ্গা নিহত হয়।
নিহতরা হলেন, ক্যাম্প-১/ইস্ট, ব্লক- বি/১ এর মৃত মোহাম্মদ ওয়ারেসের ছেলে সৈয়দ আকবর, ক্যাম্প-১ ওয়েস্টের ব্লক- সি/১৪ এর মৃত আব্দুল মতলবের ছেলে জাহিদ হোসেন এবং ক্যাম্প-১৭ সাব ব্লক-এইচ-১০৭ এর সুলতান আহমদের ছেলে নুরুল কবির।
পাঠকের মতামত